আমরা জাতি হিসেবে এখনো কতোটা 'বনচর' (অসভ্য বলতে ভীষণ বাঁধছে) রয়ে গেছি তা আমাদের 'পাবলিক প্লেস' গুলোর শৌচাগার দেখলেই বোঝা যায়।
যেমন রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, সরকারি মেডিকেল, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে কোনো সরকারি অফিস পাড়ার শৌচাগারও !
বেশিরভাগ সুস্থ সাধারণ মানুষের মাঝেই এই প্রবণতাটা ভীষণ দেখা যায়; 'প্রাণ দেবো কিন্তু রেলস্টেশনের শৌচাগারে যাবো না', একইসাথে বাসস্ট্যান্ড ও সরকারি হাসপাতালগুলোর ক্ষেত্রেও একই মনোভাব প্রযোজ্য !
অথচ যে বা যারা সেই শৌচাগারগুলো ব্যবহার করছেন, তারা সকলেই শিশু নন ? বরঞ্চ বেশিরভাগই প্রাপ্ত বয়স্ক !
খাবার গ্রহণের যেমন কিছু আদব আছে, তেমনই শৌচাগার ব্যবহারেরও কিছু আদব-লেহাজ রয়েছে ; তা সে হোক ধর্মীয় দিক থেকে কিংবা সামাজিক দিক থেকে।
সেই ছেলেবেলা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিশেষত হলে) মা থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ এবং হলের আপুদের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়ে এসছি,
"শৌচাগার ব্যবহারের পরে পর্যাপ্ত পানি ব্যবহারের মাধ্যমে তা পরিচ্ছন্ন করুন, শৌচাগার থেকে বের হওয়ার পূর্বে অবশ্যই পেছন ফিরে চোখ বুলিয়ে নিন। আপনার ব্যক্তিগত কোনো কিছু যেনো অন্যকে বিব্রত না করে। এটি যারপরনাই অসভ্যতা এবং আপনার এহেন আচরণ আপনার নিজ বংশকে নীচ প্রমাণ করে" ।।
বর্তমান সময়ে অবস্থা আরো ভয়াবহ, পাশ্চাত্যের অনুকরণে দেশ এখন 'হাই কমোড' বা 'ইংলিশ কমোড' রোগে আক্রান্ত !
যেটা ব্যক্তির ব্যক্তিগত থাকাই ভালো, আর যদি জনসাধারণের নিমিত্তেই ব্যবহার করতে হয়, তবে এটি ব্যবহারের আদবটি অন্তত শিখিয়ে দেয়া হোক।
আমরা বাঙ্গালিরা বরাবরই 'আংশিক অনুকরণে' সিদ্ধহস্ত। তেমনই আমরা পাশ্চাত্য থেকে 'বসে বসে আসন পেতে' মল ত্যাগের ব্যাপারেটি শিখলাম কিন্তু তা পরিচ্ছন্ন রাখার আদবটি শিখলাম না।
এজন্যই পাবলিক প্লেসে 'গণশৌচাগারের' কথা না হয় বাদই দিলাম, কর্পোরেট অফিস পাড়াগুলোতেও এখন শৌচাগার ব্যবহার দায় হয়ে পড়েছে ! অথচ সেই অফিসপাড়াগুলোতে যারা কাজ করেন, তা কেউই শিশু নন ! পঁচিশোর্ধতো বটেই !
তাই আগে শিষ্টতা শিখি, আদব শিখি; তারপর না হয় আধুনিক হই ।।
#শৌচাগারব্যবহারেসচেতন_হই