সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের নতুন সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন মাজহারুল কবির শয়ন। এর আগে তিনি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক উপসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। ২০১১-১২ সেশনের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদকও ছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচন, ক্যাম্পাস রাজনীতি, ডাকসু নির্বাচন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাবি প্রতিনিধি খালিদ হাসান—

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আগামী জাতীয় নির্বাচনে ঢাবি ছাত্রলীগের ভূমিকা কেমন হবে?
মাজহারুল কবির শয়ন: ঢাবি ছাত্রলীগ সবসময়ই দেশের কল্যাণে কাজ করে সুনাম কুঁড়িয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মাঝে স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে ছাত্রলীগ সচেষ্ট থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই স্মার্ট ক্যাম্পাসের আওতায় প্রতিটি স্টুডেন্ট একাধারে একজন স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট শিক্ষার্থী হবেন। শেখ হাসিনার স্মৃতি বিজড়িত এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সারা বাংলাদেশে নৌকার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যাবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপনাদের কোনো প্রস্তাবনা রয়েছে? 
মাজহারুল কবির শয়ন: দেখুন, দীর্ঘ ২৯ বছর পর যেই ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, সেখানে ছাত্রলীগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে। পরিবেশ পরিষদের মিটিং থেকে ডাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগ সবসময়ই নেতৃত্ব দিয়ে আসছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে আসছে। 

আমি নিজেও ডাকসুর নির্বাচিত নেতা ছিলাম। আমাদের মেয়াদ ছিলো সেই করোনার আগে, মার্চের ১১ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু করোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় সকল কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। আমরা আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর সাথে বসবো এবং ডাকসু নির্বাচন যেনো নিয়মিত হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবির হলে আবাসন সংকট নিরসনে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রশাসনের প্রতি কি প্রস্তাবনা থাকবে?
মাজহারুল কবির শয়ন: বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ ও ঢাবির শতবর্ষকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেখানে কিভাবে আবাসন ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করা যায় সেটাও উল্লেখ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে নতুন হল নির্মাণ, হলগুলোতে অতিরিক্ত ভবন তৈরি করে আবাসন সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাছাড়া আপনারা জানেন, ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই, যথেষ্ঠ পাঠ্য উপকরণ নেই। ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় পর্যাপ্ত আসন নেই। এজন্য এটাকেও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি শিক্ষক ছাত্র মিলনায়তন, যেখানে সামাজিক সাংস্কৃতিক মিলনমেলা হয়ে থাকে। সেখানেও বর্তমান ভবন ভেঙে নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনাও এ সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রয়েছে। তাছাড়াও ঢাবি ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যদি হলগুলোতে বহিরাগত কেউ থেকে থাকে এর যথাযথ পদক্ষেপ যেন তারা গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে ঢাবি ছাত্রলীগ তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবিতে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম করতে বাধ্য করে, এছাড়া গেস্টরুমে ছাত্রদের নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন কিনা? 
মাজহারুল কবির শয়ন: আমরা এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, হল নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সাথে কথা বলেছি। আমরা তাদের বলেছি যে, যদি এমন কিছু ঘটে থাকে যা ছাত্রলীগকে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করে বা ছাত্রলীগের সংস্কৃতিকে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করে, তাহলে ঢাবি ছাত্রলীগ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। তাছাড়া ঢাবির কোনো ছাত্রের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কোনো কাজ ঢাবি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কখনোই প্রশ্রয় দেবে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে হতে পারে?
মাজহারুল কবির শয়ন: জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অভিভাবক। আমরা তার সাথে কথা বলবো, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাথে কথা বলবো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা রাজনীতি করছে তাদের সাথে কথা বলে খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবো, ইনশাআল্লাহ।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ।
মাজহারুল কবির শয়ন: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকেও ধন্যবাদ।