ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গত দুইবছরে কমেছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। আগের বছরগুলোতে প্রতি সেশনে ১৪ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও এবছর ২০২২-২৩ সেশনে একজনও  শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। টিউশন ফি বৃদ্ধি, সেশনজট, ইন্টারনেট সমস্যাসহ নানা অব্যবস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তিতে অনীহা বিদেশি শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক , স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডিতে মোট ৬০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন। বর্তমানে অধ্যয়নরত রয়েছেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। আবাসিক হলে থাকেন ১৬ জন শিক্ষার্থী। করোনাকালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় কিছু শিক্ষার্থী অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেছেন।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে অনার্সে ৯, মাস্টার্সে তিন ও পিএইচডিতে চারজনসহ মোট ১৬ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একজন এবং ২০২১-২২ সেশনে ৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি শুরু হওয়ার পর ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন। তবে চলতি বছরে অনার্সে একজনও শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি।

কয়েকজন বিদেশী শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিলো সেগুলোর অর্ধেকও পাচ্ছি না। হলের দারুণ ইন্টারনেট সমস্যা। আমরা পরিবারের সঙ্গেও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পাচ্ছি না। ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান চাই। আমরা ৪ বছরের ভিসায় এসেছি। তবে  সেশনজটের ফলে নতুন করে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থী কমার পেছনে ফরেন সেলের অফিস না থাকা এবং এখানে নির্বাচিত লোকবল সংকটকে দায়ী করেছেন ওই অফিসের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নির্দিষ্ট অফিস না থাকায় শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করতে পারছেন না। শিক্ষার্থী যোগাযোগ করতে না পারার ফলে দিনদিন কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। এখানকার কর্মকর্তাদের ভাতা না দেওয়ায় তারা কাজ করতে চান না।

এক বিদেশি শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না।  অন্যদিকে স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হলেও সব ফি গুণতে হয়। খরচ বেশি পড়ে যাওয়ায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপে চলে যাচ্ছে। 

ফরেন সেলের কর্মকর্তা সাহদৎ হোসেন বলেন, নির্দিষ্ট লোকবল না থাকায় শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করতে পারছে না। আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভর্তি করা হয়। ফরেন সেলের কোনো অবদান নেই। আমরা  দীর্ঘদিন কাজ করছি এর জন্য কোন ভাতা হয় না।

ফরেন সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা জামাল হ্যাপি বলেন, বাংলাদেশের থেকে নিম্নমানের দেশের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হন। তবে বর্তমানে তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ায়  নতুন করে কেউ ভর্তি হচ্ছে না। বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ফরেন সেল নামে একটা অফিস আছে। শুধু নামেই আছে, এর জন্য কোন নির্দিষ্ট অফিস নেই। এখনও কোন লোকবল ও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
the daily campus