আগামী ৭ দিনের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। আজ রবিবার (৫ মার্চ) সকালে গণরুম নির্মূলে ৩ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ভবন অবরোধের সময় তিনি এ কথা বলেন।
পরে বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্বাক্ষরিত লিখিত অঙ্গীকারপত্র দিলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় উপাচার্য আশ্বস্ত করে বলেন, তোমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। তবে ঢাকায় আজকে আমার একটি জরুরি মিটিং আছে। আমি কালকের মধ্যেই একটি কমিটি গঠন করবো এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে অবৈধ অছাত্রদের হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি। এরপরও তারা হল না ছাড়লে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।
অবরোধে তাদের দাবিগুলো হলো- গণরুম, মিনি গণরুম উচ্ছেদ করে প্রথম বর্ষের সকল শিক্ষার্থীর আসন-টেবিল-চেয়ার-চেয়ার নিশ্চিত করা, অবিলম্বে সবগুলো নতুন হল খুলে কৃত্রিম আবাসন সংকট দূর করা এবং আসন বন্টন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রশাসনকে নেওয়া।
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটকে ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটিয়ে দেন তারা। অবরোধ চলাকালীন প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনের ভিতরে ঢুকতে না পেরে বাইরে দাড়িয়ে থাকেন।
অবরোধে অবস্থান নেওয়া ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, এসব দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। নামমাত্র এই আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম ব্যবস্থা চিরকাল ছিল না। এর আগে সকল বৈধ শিক্ষার্থীকে সিট দিতে পারলেও এখন কেন পারছে না। এটার সমাধান ছিল উন্নয়ন প্রকল্পের ছয়টি নতুন হল নির্মাণ। দেড় বছর পার হয়ে গেলেও প্রশাসন হলগুলো উদ্বোধন করতে পারেননি। একের পর এক আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও প্রশাসনের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় আজকে আমাদের এই কর্মসূচি।
এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, আমরা এর আগে একটি শিক্ষার্থীদের গণরুম বিলুপ্তির জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি আমলে নেয়নি। আমদের দাবি আদায় না হওয়া প্রর্যন্ত আমরা এই অবরোধ চালিয়ে যাবো।
পরে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আসন সঙ্কট সমাধানে দুইটি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। আরও দুইটি হল মার্চের মধ্যে খুলে দিতে পারবো বলে আশাবাদী। তাহলে অধিকাংশ সমস্যারই সমাধান হবে। শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন আজকের মধ্যেই হলগুলো খুলে দিতে হবে। ১০ তলা বিশিষ্ট হলে লিফট এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া কিভাবে চালু করবে?
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দীন বলেন, হলগুলোর ফার্নিচারসহ অন্যান্য ঘাটতিগুলো পূরণ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে বাজেট চেয়েছি। কিন্তু সরকার এই মূহুর্তে বাজেট অনুমোদন করছে না। তবে ৩০ মার্চের মধ্যে ১৭নং হল ও ২০নং হল চালু করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করি।